Uncategorized

লুসিড ড্রিম কি – লুসিড ড্রিমিং কিভাবে করবো

লুসিড ড্রিম কি – লুসিড ড্রিমিং কিভাবে করবো

আমাদের আশেপাশে আমরা যা কিছু দেখি বা অনুভব করি, এর সবকিছুই স্বপ্ন এর মাঝে অন্য স্বপ্ন। কবিতার ছন্দ ছাড়াও স্বপ্ন মানবজীবনের অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। প্রাচীনকালের সময়ে গুহায় নিদ্রারত আদিম মানুষ এর জীবনে যেমন স্বপ্ন হাজির হতো, তেমনই ভবিষ্যত এর কোনো অত্যাধুনিক সভ্যতার ইমারতে নিদ্রালু ব্যক্তিও স্বপ্ন দেখে থাকবেন। দার্শনিকদের আড্ডা থেকে ধর্মীয় মজলিস- সকল ক্ষেত্র গুলোতেই স্বপ্ন বহুল আলোচিত বিষয়। আগেরদিনে স্বপ্নকে অনেকটা রহস্যময় ধাঁধার মতো দুর্বোধ্য ধরা হয়ে থাকতো। অনেকে সম্প্রদায় এর কাছে এই ধাঁধা ছিল আধ্যাত্মিক জগতে অনুপ্রবেশ এর উন্মুক্ত দ্বার। বিশেষ করে, আমেরিকার স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে এ ধরণ এর বিশ্বাস প্রচলিত ছিল। স্বপ্নে পাওয়া তথ্য অনেক সম্প্রদায় এর নিকট ভবিষ্যদ্বাণী বা দৈব নির্দেশনা হিসেবে এখনো গণ্য করা হয়।

স্বপ্ন দেখা মানব সমাজ এর নিকট লুসিড ড্রিম বা স্বচ্ছ স্বপ্ন কোনো নতুন ইনফো নয়। বরং সেই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ এধরণ এর স্বপ্ন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে এসেছে। লুসিড ড্রিম হচ্ছে এমন ধরনের স্বপ্ন যেখানে ব্যক্তি স্বপ্ন এর মধ্যেও সজাগ থাকবেন এবং তিনি স্বপ্ন দেখছেন তা বুঝে নিতে পারবেন। শুধু তা-ই নয়, অনেক ক্ষেত্রে স্বপ্ন দেখা ব্যক্তি স্বপ্নের ঘটনা, পরিবেশ, উপস্থিত ব্যক্তি- সবকিছু নিজের ইচ্ছেমত চেঞ্জ করে নিতে পারেন। দার্শনিক অ্যারিস্টটল এর অনেক পাণ্ডুলিপিতে স্বচ্ছ স্বপ্ন নিয়ে আলোচনা পাওয়া গেছে। যদিও তিনি লুসিড ড্রিম বা এ ধরনের কোনো সংজ্ঞা ব্যবহার করেননি। তিব্বত এর বৌদ্ধ তপস্যী দের মাঝে লুসিড ড্রিমকে ইউজ করে যোগ ব্যায়াম এর মাধ্যমে তপস্যা করার কথাও জানা যায়।

শুনতে অনেকটা বিরল লাগলেও লুসিড ড্রিম কোনো দুর্লভ এক্সপ্রিয়েন্স নয়। বরং আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা এ ধরনের স্বপ্ন দেখেছেন। ব্রাজিলে একবার লুসিড ড্রিম নিয়ে একটি জরিপ চালানো হয়েছিল। ৩,৪২৭ জন ব্যক্তি এর উপর করা সেই জরিপে দেখা যায় প্রায় ৭৭% ব্যক্তি জীবনে একবার হলেও লুসিড ড্রিম দেখে থাকেন। লুসিড ড্রিম কোনো অপবিজ্ঞান বা আধ্যাত্মিক কোনো তেলেসমাতি নয়। বরং এর পেছনে রয়েছে সাইন্টিফিক ব্যাখ্যা। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, যে কেউ চাইলে কিছু অনুশীলন এর মাধ্যমে এর স্বাদ নিতে পারবে। বিশ্বের অনেক দেশে লুসিড ড্রিম দেখতে শেখানোর জন্য ওয়ার্কশপ এর ব্যবস্থাও রয়েছে।

কখন লুসিড ড্রিম হয়?

আমরা গড়ে প্রতিদিন ঘুম এর মাঝে প্রায় ৪ থেকে ৬ বার স্বপ্ন দেখে থাকি সাধারণত। তবে বেশিরভাগ স্বপ্নই আমরা ভুলে যাই বলে আমাদের মনে থাকে না। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, দৈনিক দেখা স্বপ্নগুলোর মধ্যে ঠিক কোন স্বপ্নগুলো লুসিড ড্রিমিং এর অংশ হতে পারে ও আমরা কখন লুসিড ড্রিম দেখি? বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় দেখা যায়, আমাদের ঘুমকে দুটো পর্যায়ে ভাগ করা যায়- রেম (REM) এবং নন-রেম (Non-REM)। রেম (REM) শব্দটি মূলত ইংরেজি Rapid Eye Movement এর সংক্ষিপ্ত শব্দ। ঘুমিয়ে পড়ার প্রায় ৯০ মিনিট এর মাথায় রেম পর্যায় শুরু হয়। এই ধাপে আমাদের মস্তিষ্ক অত্যন্ত সক্রিয় থাকে, হৃদক্রিয়া বৃদ্ধি পায় এবং চোখের পাতার কাঁপন বৃদ্ধি পেয়ে যায়। চোখের পাতার কাঁপন থেকেই এই পর্যায় এর নাম হয়েছে র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট বা রেম। অপরদিকে নন-রেম অবস্থা তে আমাদের মস্তিষ্কের ক্রিয়া, হৃদক্রিয়া এবং চোখের পাতার কাঁপন অনেকটাই কম থাকে।

ঘুমের যেকোনো পর্যায়ে আমরা স্বপ্ন দেখলেও রেম পর্যায় এর স্বপ্ন অনেকটাই প্রাণবন্ত হয়। মূলত, এই ধাপে লুসিড ড্রিম দেখা হয়। লুসিড ড্রিমের উপর একজন ব্যক্তি ঠিক কতটুকু কর্তৃত্ব খাটাতে পারবেন, তা ব্যক্তিভেদে সাধারণত ভিন্ন হয়ে থাকে। অনেকে লুসিড ড্রিমে নিজের অস্তিত্ব টের পাবার সাথে সাথেই জেগে উঠেন। আবার অনেকে দিব্যি স্বপ্নের ঘটনা নিজের ইচ্ছেমতো বদলাতে থাকেন।

লুসিড ড্রিম কি - লুসিড ড্রিমিং কিভাবে করবো

ঠিক কোন কারণে একটি স্বপ্ন লুসিড ড্রিম হিসেবে দেখা হয় তা পরিষ্কার ভাবে এখনো জানা যায়নি। তবে স্বপ্ন বিশারদ ড. ম্যাথিউ ওয়াকার এর মতে, আমাদের মস্তিষ্কের ল্যাটারাল প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স (যা সাধারণত আমাদের যুক্তিতর্ক পাওয়ার নিয়ন্ত্রণ করে) এর পেছনে দায়ী। রেম ঘুমের সময় মস্তিষ্ক এর এই অংশ নিষ্ক্রিয় থাকার কথা। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই অংশ সক্রিয় হয়ে উঠলে আমরা একই সাথে স্বপ্ন দেখি এবং যুক্তি বিচারও করতে পারি। এ ধরনের ঘটনা ব্যক্তিকে স্বপ্ন এর মাঝেও সজাগ থাকার সক্ষমতা প্রদান করে। সম্ভবত এই কারণে আমরা লুসিড ড্রিম দেখে থাকি সাধারণত। তবে এই তত্ত্ব এখনও জোড়ালো প্রমাণিত হয়নি।

লুসিড ড্রিমের তাৎপর্য্য

লুসিড ড্রিম নিয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান শুরু হবার পরই নতুন চিন্তা শুরু হলো। এবার বিজ্ঞানীরা চিন্তা করতে লাগলেন লুসিড ড্রিমকে মানব কল্যাণে ইউজ করার কথা। প্রাথমিকভাবে লুসিড ড্রিমকে ব্যবহার করে মানুষের বিভিন্ন মানসিক সমস্যা নিসরণ করার কথা ভাবা হলো। অস্ট্রেলিয়া তে এক স্বপ্ন বিশারদ ড. ডেনহোম এস্পি লুসিড ড্রিমকে মানসিক চিকিৎসায় ব্যবহার করার কথা বলেন। বিশেষ করে, যারা ক্রমাগত দুঃস্বপ্ন দেখার সমস্যা ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ইউজ বেশ ফলপ্রসূ। তিনি রোগীদের কে থেরাপির মাধ্যমে দুঃস্বপ্নকে লুসিড ড্রিমে পরিণত করার ট্রেইনিং দেন। এরপর তাদের স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ এর মাধ্যমে সমস্যা দূর করার চেষ্টা করা হয়।

এছাড়া বিভিন্ন বস্তু এবং অবস্থার প্রতি ভয় বা ফোবিয়া যাদের কাজ করতেছে, তাদের জন্যও লুসিড ড্রিম থেরাপি ব্যবহার এর কথা উঠেছে। স্বপ্নে কাউকে বারবার তার ফোবিয়ার মুখোমুখি করে ভীতি কাটিয়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন ড. এস্পি। তবে এসব এর বাইরে কেউ স্রেফ আগ্রহ বা বিনোদনের উদ্দেশ্যেও লুসিড ড্রিম এনজয় করতে পারে। লুসিড ড্রিম অনেকটা ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির স্বাদ দেবে আপনাকে। যারা লুসিড ড্রিমে দক্ষ, তারা ইচ্ছে করলেই স্বপ্নকে অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে রিসিভ করতে পারেন। অনেকের কাছে লুসিড ড্রিম সিনেমা বা গল্পের মতো উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আপনি নিজেই থাকবেন চালক এর আসনে। গল্পের কাহিনী আবর্তন করবে আপনার খেয়াল খুশিমতো।

লুসিড ড্রিমিং কিভাবে করবো

লুসিড ড্রিম সম্পর্কে একগাদা আলোচনার পর অনেকেই হয়তো আমরা জানতে আগ্রহী, কীভাবে লুসিড ড্রিম এনজয় করা যেতে পারে। তাদের জন্য সুখবর, ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা লুসিড ড্রিম আয়ত্তের জন্য বেশ কিছু ট্রেইনিং প্রস্তুত করেছেন। তবে একগাদা কৌশলেল এর ভিড়ে তিনটি পদ্ধতি অনেক বেশিই প্রচলিত। প্রথমেই যে পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো, তা হচ্ছে ‘বাস্তবতা পরীক্ষা’। এখানে রিয়েলিটি বলতে জেগে থাকার অবস্থাকে বোঝানো হয়েছে। এই পদ্ধতিতে আপনাকে বারবার টেস্ট করতে হবে আপনি জেগে আছেন নাকি স্বপ্ন দেখতেছেন। এই পদ্ধতিতে আপনাকে হয়তো সারাদিনে বেশ কয়েকবার প্রশ্ন করতে হবে, “আপনি জেগে আছেন নাকি স্বপ্ন দেখছেন?” একসময় এটি অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেলে আপনি স্বপ্নের মাঝেও এই প্রশ্নটি করতে সক্ষম হবেন। একসময় এই পদ্ধতি আয়ত্ত হয়ে গেলে আপনি স্বপ্নের মাঝেও নিজেকে সজাগ রাখতে পারবেন বলে ধারণা করা হয়।

লুসিড ড্রিম কি - লুসিড ড্রিমিং কিভাবে করবো

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে এই পদ্ধতি এপ্লাই করতে হবে? বাস্তবতা পরীক্ষার সবচেয়ে আনন্দদায়ক এবং বহুল প্রচলিত পদ্ধতি হচ্ছে এক হাতের আঙ্গুলকে অপর হাতের তালুতে চেপে ধরে রাখা। যদি আপনার আঙ্গুল তালুর ভেতরে ঢুকে যায়, তাহলে ধরে নিতে হবে আপনি স্বপ্ন দেখছেন। অন্যথায় বুঝবেন আপনি জেগে আছেন। এছাড়াও আশেপাশে আয়নায় নিজেকে পরীক্ষা করুন। যদি স্বপ্নের জগতে থাকেন, তাহলে আয়নায় আপনার প্রতিফলন আকারের লাগতে থাকবে হবে। কোনো লেখা দেখলে সেটি পড়বার চেষ্টা করবেন। এরপর কিছু সময়ের জন্য অন্যদিকে তাকিয়ে পুনরায় লেখার দিকে তাকিয়ে পড়বেন। যদি স্বপ্ন দেখতে থাকেন, তাহলে লেখাটি দ্বিতীয়বার এক থাকবে না। এই কাজগুলো দিনে বেশ কয়েকবার প্র‍্যাক্টিস করলে একসময় অভ্যাসে পরিণত হবে। তখন স্বপ্নের মধ্যেও এই কাজগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটলে জেগে উঠবে আপনার মস্তিষ্ক। তখন আপনি লুসিড ড্রিম উপভোগ করতে পারবেন।

যেহেতু লুসিড ড্রিম কোনো প্যাটার্ন অনুসরণ না করে যেকনো সময়ই হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বেশকিছু পদ্ধতি আছে, যেগুলো অনুশীলন এর মাধ্যমে লুসিড ড্রিম ঘটানো যেতে পারে। আমাদের লুসিড ড্রিম হয় ঘুমের রেম পর্যায়ে। আর সেসময় আপনার মস্তিষ্ক কে সজাগ রাখতে পারলেই লুসিড ড্রিম দেখা সম্ভব হবে। এজন্য আপনাকে প্রতিদিন ঘুমানোর পর পাঁচ ঘণ্টার মাথায় জেগে উঠে যেতে হবে। এরপর পুনরায় আবারও ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। এর মাধ্যমে আপনার ডাইরেক্ট ঘুমের রেম পর্যায়ে চলে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার রেম পর্যায়েও সজাগ থাকার পসিবলিটি বেড়ে যায়। আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে MILD (মাইল্ড)। MILD এর পূর্ণরূপ Mnemonic Induction of Lucid Dreams. এই পদ্ধতিতেও আপনি ঘুমোতে যাবার আগে নিজেকে বারবার বলবেন, “আজ আমি লুসিড ড্রিম দেখবো”। এই পদ্ধতি প্রয়োগ এর সবচেয়ে ভালো সময় হতে পারে আগ এর পদ্ধতিতে ৫ ঘণ্টা পর জেগে পুনরায় ঘুমোতে যাবার আগে। এ ধরনের পদ্ধতিগুলোকে আবেশ পদ্ধতি বলা হয়।

আরেকটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে স্বপ্নলিপি লেখার অভ্যাস গড়ে তোলা। আপনার এজন্য একটি ডায়েরি রাখতে হবে। এই ডায়েরিতে আপনি শুধুমাত্র আপনার স্বপ্ন গুলো লিপিবদ্ধ করবেন। যেহেতু ঘুম থেকে উঠার পর পরই স্বপ্ন গুলো সবচেয়ে ক্লিয়ারভাবে মনে থাকে, তাই এই ডায়েরি ঘুমাতে যাবার আগে মাথার কাছে রেখে দেয়া ভালো। ঘুম থেকে উঠে যাতে দ্রুত স্বপ্নের কথা লিখে ফেলবেন। এই ডায়েরি আপনি দিনে একবার হলেও পড়বেন। এর ফলে আপনি নিজের স্বপ্ন এর সাথে পরিচিত হয়ে যাবেন। এই পদ্ধতি স্বপ্ন দেখা অবস্থায় আপনাকে সজাগ থাকতে হেল্প করবে। এভাবে এখন পর্যন্ত আলোচিত পদ্ধতি গুলো প্রতিদিন অনুশীলন করলে আপনি ধীরে ধীরে নিজেকে লুসিড ড্রিম দেখায় অভ্যস্ত করে তুলতে পারবেন।

লুসিড ড্রিম এর সম্ভাব্য পার্শপ্রতিক্রিয়া

লুসিড ড্রিমের বিনোদন আর অ্যাডভেঞ্চারে মত্ত হবার আগে এর কিছু নেগেটিভ সাইড সম্পর্কে আপনার ধারণা রাখা প্রয়োজন হবে। যদিও লুসিড ড্রিমকে নিরাপদ ধরা যায়, তবে যাদের মানসিক অসুস্থতা বা কোনো সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। লুসিড ড্রিম এর মধ্যে আপনাকে জেগে থাকতে হচ্ছে। এজন্য হয়তো আপনার ঘুমের প্রধান উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং ঘুম এর অভাবে আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে পারে। বিষণ্ণতা এবং উৎকণ্ঠায় ভোগা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঘুম এর ব্যাঘাত মানসিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

যেহেতু আপনি স্বপ্ন এর মাঝেও জেগে আছেন, তাই স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে তালগোল লেগে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ব্যক্তি কোনটা বাস্তব আর কোনটা স্বপ্ন তা নির্ধারণ করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের যেকোনো সমস্যা বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনে। তাই লুসিড ড্রিম এর পূর্বে নিজের মানসিক স্থিরতা এবং বিশ্রাম নিয়ে কোনো কার্পণ্য করা যাবে না।

স্বপ্ন সেই প্রাচীনকাল থেকে আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। যুগে যুগে বহু গুণীজন এর স্বপ্নে পাওয়া নির্দেশনাকে কাজে লাগিয়ে বড় আবিষ্কার করার কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। বাস্তবতা আমাদের ক্ষমতার উপর যে লাগাম টেনে ধরেছে, সেই লাগাম আমরা স্বপ্নজগতে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারি। আর স্বপ্ন এর মধ্যে সর্বাধিক আকর্ষণীয় একটি অধ্যায় হচ্ছে লুসিড ড্রিম। লুসিড ড্রিম একটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা যা আমাদের নতুন কিছুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে। লুসিড ড্রিমকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে মানুষ এর ভালো করা যায়, এ নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি গবেষণা চলছে। হয়তো লুসিড ড্রিম আমাদের ফিউচারে নতুন কোন পসিবলিটির জন্ম দেবে। তবে এসব বিচারের বাইরে লুসিড ড্রিম সবসময় অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে সমাদৃত হবে। ভালোমন্দ বিচার এর পরে যদি আপনি স্বপ্নের মধ্যেও অ্যাডভেঞ্চার করতে চান, তাহলে লুসিড ড্রিমের জগতে আপনাকে স্বাগতম।

 

Show More

Related Articles